২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের নতুন পরিকল্পনা সরকারের একটি সাহসী পদক্ষেপ, তবে এর বাস্তবায়ন নির্ভর করে কার্যকর কৌশল, পর্যাপ্ত সম্পদ এবং স্বচ্ছ জবাবদিহিতার উপর।

২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের নতুন পরিকল্পনা: কতটা বাস্তবসম্মত? একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা বাস্তবায়নের পথে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য: সরকারের পরিকল্পনা

বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বিস্তার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

সরকারের এই পরিকল্পনা কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। কেউ মনে করেন যে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সহায়তায় এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আবার কেউ মনে করেন যে দুর্নীতি, সুশাসনের অভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের কারণে এই লক্ষ্য অর্জন কঠিন হবে।

A group of Bangladeshi women participating in a microfinance program, receiving training and financial assistance. The image should highlight the empowerment of women through economic inclusion.

সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ

  • সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, এবং অন্যান্য ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
  • শিক্ষাখাতে উপবৃত্তি প্রদান, বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।
  • স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে, এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন করা হয়েছে।
  • কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতকে উৎসাহিত করা হচ্ছে, এবং যুবকদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।

তবে, এসব পদক্ষেপের কার্যকারিতা এবং প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় এবং দুর্নীতি একটি বড় সমস্যা। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান এখনও অনেক উন্নত করতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির হার এখনও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, এবং খরা বেড়ে গেছে, যা দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। এছাড়া, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য দারিদ্র্য বিমোচনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।

পরিশেষে, ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য অর্জন করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকারকে আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে, এবং দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব দূর করতে হবে। পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভূমিকা

দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভূমিকা অপরিসীম। সরকার বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি পরিচালনা করছে, যার মাধ্যমে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করা হচ্ছে।

এই কর্মসূচিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, এবং কর্মসংস্থান কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, এবং বাসস্থানের চাহিদা পূরণে সহায়তা করা হচ্ছে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রভাব

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং তারা স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় বেশি মনোযোগ দিতে পারছে।

  • বয়স্ক ভাতা বয়স্ক মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করছে।
  • বিধবা ভাতা বিধবা নারীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা দিচ্ছে।
  • প্রতিবন্ধী ভাতা প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করছে।
  • মাতৃত্বকালীন ভাতা মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা করছে।

তবে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কার্যকারিতা আরও বাড়ানো সম্ভব। এক্ষেত্রে, কর্মসূচিগুলোর আওতা বাড়ানো, বরাদ্দকৃত অর্থের অপচয় রোধ করা, এবং দরিদ্র মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।

এছাড়া, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে আরও কার্যকর করতে হলে দরিদ্র মানুষের চাহিদা ও প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মসূচি তৈরি করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে কর্মসূচিগুলোর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে, এবং নিয়মিতভাবে কর্মসূচিগুলোর মূল্যায়ন করতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি দারিদ্র্য বিমোচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এই কর্মসূচিকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করে ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন: দারিদ্র্য বিমোচনের চাবিকাঠি

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন দারিদ্র্য বিমোচনের চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। একটি শিক্ষিত ও সুস্থ জাতি অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, উপবৃত্তি প্রদান, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, এবং স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন।

A classroom scene in a rural school in Bangladesh, showing children actively participating in learning activities. The image should emphasize the importance of education in breaking the cycle of poverty.

শিক্ষার গুরুত্ব

শিক্ষা মানুষকে সচেতন করে তোলে, এবং তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। একটি শিক্ষিত মানুষ ভালো কাজ পেতে পারে, এবং তার জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে।

  • শিক্ষা মানুষকে নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে।
  • শিক্ষা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে, এবং তাদের সমাজে অবদান রাখতে উৎসাহিত করে।
  • শিক্ষা মানুষকে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বের হতে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব

সুস্থ শরীর ও মন মানুষের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, এবং তাদের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে। একটি সুস্থ জাতি অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে, এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন করা হয়েছে। তবে, স্বাস্থ্যখাতে আরও অনেক উন্নয়ন প্রয়োজন।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

পরিশেষে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ করা দারিদ্র্য বিমোচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। এই খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি সুস্থ ও শিক্ষিত জাতি গঠন করা সম্ভব, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: দারিদ্র্য মুক্তির পথ

কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য মুক্তির অন্যতম পথ। মানুষের হাতে কাজ থাকলে তাদের আয় বৃদ্ধি পায়, এবং তারা দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে পারে।

সরকার কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতকে উৎসাহিত করা, যুবকদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা, এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।

এসএমই খাতের ভূমিকা

এসএমই খাত বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই খাতে কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সরকার এসএমই খাতকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান, এবং কর ছাড়।

  • এসএমই খাত স্থানীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে।
  • এসএমই খাত নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা করে।
  • এসএমই খাত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে।

যুবকদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, যাতে তারা ভালো কাজ পেতে পারে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে যুবকদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, যেমন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, পোশাক তৈরি, এবং ইলেকট্রনিক্স।

বৈদেশিক কর্মসংস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়ের উৎস। সরকার বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশের সাথে চুক্তি করছে, এবং শ্রমিকদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করছে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য অপরিহার্য। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এগিয়ে আসতে হবে।

পরিশেষে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য মুক্তি সম্ভব। এই লক্ষ্যে সরকার ও বেসরকারি খাতকে একসাথে কাজ করতে হবে।

দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব: দারিদ্র্য বিমোচনের অন্তরায়

দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব দারিদ্র্য বিমোচনের পথে একটি বড় অন্তরায়। দুর্নীতি উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করে, এবং দরিদ্র মানুষের অধিকার হরণ করে।

বাংলাদেশে দুর্নীতি একটি ব্যাপক সমস্যা। সরকারি অফিসগুলোতে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না বললেই চলে। দুর্নীতির কারণে দরিদ্র মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

সুশাসনের অভাব

সুশাসনের অভাবে সরকারি সেবা জনগণের কাছে পৌঁছায় না। দরিদ্র মানুষ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হয়, এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয় না।

  • দুর্নীতি সরকারি অর্থের অপচয় করে।
  • দুর্নীতি উন্নয়নের গতি কমিয়ে দেয়।
  • দুর্নীতি দরিদ্র মানুষকে আরও দরিদ্র করে তোলে।

সরকার দুর্নীতি দমনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন করা, এবং তথ্য অধিকার আইন চালু করা। তবে, দুর্নীতি দমনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সততা ও নিষ্ঠা বাড়াতে হবে, এবং জনগণের অংশগ্রহণে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব দূর করতে পারলে দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হবে। এই লক্ষ্যে সরকার ও জনগণকে একসাথে কাজ করতে হবে।

পরিশেষে, দুর্নীতি ও সুশাসনের অভাব দারিদ্র্য বিমোচনের পথে একটি বড় বাধা। এই বাধা দূর করতে পারলে ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত: দারিদ্র্য বিমোচনে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত দারিদ্র্য বিমোচনে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হচ্ছে, এবং তাদের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দরিদ্র মানুষের আয় কমে যাচ্ছে, এবং তারা আরও দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে, এবং স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা বাড়ছে।

  • বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দরিদ্র মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারাচ্ছে।
  • খরা ও লবণাক্ততার কারণে ফসলের উৎপাদন কম হচ্ছে।
  • সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে উপকূলীয় এলাকার মানুষ বাস্তুহারা হচ্ছে।

সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যেমন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, এবং খরা সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন।

তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করার জন্য আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করতে পারলে দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হবে। এই লক্ষ্যে সরকার ও জনগণকে একসাথে কাজ করতে হবে।

পরিশেষে, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত দারিদ্র্য বিমোচনের পথে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্ষিপ্ত বিবরণ
🎯 দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
🛡️ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার মাধ্যমে দরিদ্রদের সহায়তা করা হচ্ছে।
🍎 শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক।
💼 কর্মসংস্থান সৃষ্টি এসএমই খাতকে উৎসাহিত করা এবং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

সাধারণ জিজ্ঞাসা

দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের প্রধান লক্ষ্য কী?

সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো ২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য কমিয়ে আনা এবং দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য কী?

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র ও অসহায় মানুষের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।

শিক্ষাখাতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো কী কী?

শিক্ষাখাতে সরকার বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, উপবৃত্তি প্রদানসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাতের ভূমিকা কী?

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সরকার এই খাতকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত কীভাবে দারিদ্র্য বিমোচনকে প্রভাবিত করে?

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে, যা দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকাকে আরও কঠিন করে তুলছে।

উপসংহার

২০২৫ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের পরিকল্পনা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে, এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে সরকারকে দুর্নীতি দমন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

Maria Teixeira